সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
সৈয়দপুরে তাহেরীর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াত এর মানববন্ধন গাজীপুরের মৌচাকে ৭২ ঘন্টায় “শিহান” হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটন ও আসামি গ্রেফতার নুরুল হিকমাহ মাদরাসায় বিশিষ্টজনদের সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত সৈয়দপুরে বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল করে জামায়াত সৈয়দপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা প্রদান মহান আল্লাহ মদ ও মদের অর্জিত মূল্য হারাম করেছেন সোস এর উদ্যােগে বর্ণাঢ্য  র‍্যালি ও মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হোমিওপ্যাথিক ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত পীরগঞ্জে পূবালী ব্যাংকের ৯ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (কঃ)’র পবিত্র খোশরোজ শরীফ উপলক্ষে প্রস্তুতি সভা ও মাসিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

উপ-সম্পাদকীয়

প্রতিবেদক এর নাম / ৬৯ বার পড়া হয়েছে
বর্তমান সময় সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩৭ পূর্বাহ্ন

উপ-সম্পাদকীয়

প্রাইমারি স্কুল বনাম কিন্ডারগার্টেন

শহরে রাস্তার পাশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দেখলে এখানে কারা ভর্তি হয় এমন প্রশ্ন জাগে। শহরটাকে আমরা বড়লোকদের জায়গা মনে হয়। প্রাথমিক শিক্ষাস্তরে এত বেশি পরিমাণ কিন্ডারগার্টেন রয়েছে শহরের আনাচে কানাচে। স্কুলগুলোর শিক্ষার্থী সংখ্যাও কম নয়। এরকম পরিস্থিতিতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো যেখানে প্লে, নার্সারী, কেজি আরো কত শ্রেণি নেই, সেখানে অভিভাবকদের আগ্রহ না থাকাটা বেশি যুক্তিযুক্তই হয়তো। অভিভাবকরা স্বাবলম্বী কিন্তু কিন্ডারগার্টেনে সন্তান পড়ে না এমন উদাহরণ সম্ভবত নেই। গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে বেশ শিক্ষার্থী আছে। যেসকল জায়গা গুলো মফস্বলের ছোঁয়া পেয়েছে সেখানেও কিন্ডারগার্টেনের জয়যাত্রা শুরু হয়েছে।

জার্মান শিশু-শিক্ষানুরাগী ফ্রেডরিখ ফ্রোয়েবল যখন কিন্ডারগার্টেন এর সূচনা করলেন তার উদ্দেশ্য যে খুবই মহৎ ছিলো তা অনস্বীকার্য। তবে বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই ব্যবস্থা উন্নয়নশীল বা তৃতীয় বিশ্বে কেমন প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়ে ভাবার অবকাশ আছে। কিন্ডারগার্টেন গুলোতে বাচ্চাদের যেভাবে সকল বিষয়ে সম্যক জ্ঞানী করার চেষ্টা করা হয় তা সঠিক নিয়মে হচ্ছে কিনা এটাও দেখা দরকার। শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য দরকার প্রকৃতি। পড়াশুনার নামে অবশ্যই শিশুর শৈশব ধ্বংস করা যাবে না। কিন্ডারগার্টেনের বাচ্চারা প্রকৃতি থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততটাই যেন থাকে। পড়াশোনার চাপ এবং এরপরে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া। মূল স্রোত থেকে অনেকটাই দূরে কিন্ডারগার্টেন শিক্ষাব্যবস্থা। খেলতে খেলতে শিখার যেই উদ্দেশ্য ছিলো সেই সাথে পারিপার্শ্বিকের সাথে খাপ খাইয়ে একজন সুনাগরিক আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার যেই আদর্শ শিক্ষার স্বপ্ন আমরা দেখি তার দিকে এগুচ্ছে কি শিক্ষা! এটিই প্রশ্ন? দুঃখজনক বিষয় হলো অভিভাবকরাও এই স্রোতে গা ভাসিয়ে শৈশব ধ্বংস করা এসব জায়গায় সন্তান দিয়ে নিশ্চিন্তে থাকতে চান। আর কেনই বা করবেন না! বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা নিজেদের সন্তানদেরকে প্রাইমারিতে ভর্তি না করে কিন্ডারগার্টেন স্কুলে পড়াচ্ছেন, ফলে নিজেদের সন্তানদের শিক্ষার বিষয়ে চিন্তামুক্ত থাকছেন, এমন অনুভূতি উপলব্ধি থেকে সাধারণ পরিবারের মফস্বলের অভিভাবকরাও কিন্ডারগার্টেনের দিকে জোকছে।
সন্তানকে ভালো স্কুলে পড়িয়ে মানসম্মত শিক্ষার সুযোগের প্রত্যাশায়
স্বপ্নপুরণ করতে চায়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে হাজির থাকলেও
শিক্ষার্থীদের দিকে দৃষ্টি কম দিয়ে অবহলো ও অমনোযোগী বশত দায়িত্বে বিমুখ থাকেন এমন অভিযোগও পাওয়া যায় বহু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। যা কোনোমতেই কাম্য নয়।

তবে শহরে আদর্শ কিন্ডারগার্টেন আছে যেগুলো খুবই খরচ সাপেক্ষ৷ এগুলোকে উদাহরণ হিসেবে দেখিয়ে বড় একটা সংখ্যাকে পেছনে রাখা যাবে না। বাংলাদেশের নিম্নমানের এসব কিন্ডারগার্টেনের সমস্যা চোখে পড়ে বাচ্চারা বড় হওয়ার সাথে সাথেই। উচ্চতর শিক্ষায় গিয়ে পিছিয়ে পড়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী। কিন্ডারগার্টেন গুলো বাচ্চাদের একটা গড় অবস্থায় পৌঁছে দেয় এবং গণহারে মুখস্ত একটা অবস্থার মতো। সমসাময়িক সংকট, পারিপার্শ্বিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা এদের নেই।

অন্যদিকে এইযে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এদের আমরা শুরুতেই পিছিয়ে রাখি। সন্তানকে ছোটবেলায়ই মেধাবী মনে হলে তাকে সরকারি বিদ্যালয়ে পড়ানো কষ্টকর মনে করি। গ্রাম্য অভিভাবকরা পড়াশোনার বিষয়ে অসচেতন। তাদের সঠিক দিক নির্দেশনার জন্য সরকারি ভাবে প্রশিক্ষিত শিক্ষকদের উপর আমরা ভরসা রাখতে পারি না। ভরসা বা বিশ্বাস বদলানো কঠিন কাজ তবে যদি উচ্চশিক্ষায় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের দিকে তাকান দেখতে পাবেন এসব গ্রাম্য, গরিব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অজস্র শিক্ষার্থী। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কারিকুলাম শিশু বান্ধব ভাবেই বানানো। এটা যাই হোক শিশুর শৈশবকে ধ্বংস করে না। গ্রামের শিশুরা প্রকৃতির যতটা সাহচর্য পায় আর নিজেরা ছোট থেকেই দেখতে থাকে চারপাশের যাপিত জীবন। যার কারণে গ্রামের বাচ্চাদের খাপ খাওয়ানোর ক্ষমতাও থাকে কিন্ডারগার্টেন পড়া এসব বাচ্চাদের চেয়ে বেশি।

মোছাঃ রেহেনা খাতুন
সহকারী শিক্ষকঃ
৯০ নং চাপুরিয়া সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়,মুক্তাগাছা -ময়মনসিংহ।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর