র্যাব -১৪ এর অভিযানে হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার
মোঃ শাহীন আলম
১। “বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগানকে সামনে রেখে জন্ম হয় র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে র্যাব বাংলাদেশের মানুষের কাছে আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। র্যাব তার প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই জঙ্গি ও সন্ত্রাস, ধর্ষন, মাদক, অস্ত্র, অপহরণ, হত্যাসহ বিভিন্ন প্রকার অবৈধ কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যা দেশের সর্বস্তরের জনসাধারণ কর্তৃক ইতোমধ্যেই বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
২। এখানে উল্লেখ্য যে, এজাহার পর্যালোচনা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আনুমানিক ০৬(ছয়) বছর পূর্বে ভিকটিম এখলাছ মিয়া (৩৩), পিতা-মৃত আলী আমজাদ খাঁ, সাং-পাছর (মাইজপাড়া), থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণা এর সহিত একই জেলার মদন থানাধীন বাড়রী (সুতিয়ারপাড়) গ্রামের মোঃ খাইরুল ইসলাম এর কন্যা মোছাঃ মুক্তা আক্তার (২৮) এর সহিত ইসলামী শরীয়াহ্ মোতাবেক বিবাহ হয়। বিবাহের ০১ বছর পর ভিকটিম এখলাছ মিয়া জীবিকার প্রয়োজনে বিদেশে চলে গেলে ভিকটিমের স্ত্রী তার বাবার বাড়ীতে বসবাস করিত। ভিকটিম বিদেশ থেকে উপার্জিত সমুদয় অর্থ তার স্ত্রী ০১ নং আসামীর নিকট পাঠাতো। ০৫ বছর বিদেশে থাকার পর ভিকটিম বাড়ীতে চলে এসে তার উপার্জিত পাঠানো অর্থসহ স্ত্রীকে নেওয়ার জন্য নেত্রকোণা জেলার মদন থানাধীন বাড়রী (সুতিয়ারপাড়) গ্রামস্থ তার শ্বশুর মোঃ খায়রুল ইসলাম এর বাড়ীতে যায় এবং তার স্ত্রীকে টাকা-পয়সা সহ তার বাড়ীতে চলে আসার জন্য বলিলে তার স্ত্রী টাকা-পয়সাও দিবে না ও তার বাড়ীতে আসবে না বলে জানালে ভিকটিমের সহিত কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে, আসামীগন সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামী ভিকটিমের হাত-পা বেঁধে পেট্রোল ঢেলে দিয়ে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরবর্তীতে, স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ভিকটিম এখলাছ মিয়া’কে চিকিৎসার জন্য মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হলে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিকসার্জারি ইনস্টিটিউট, ঢাকায় প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ই নভেম্বর ২০২৩ খ্রি. তারিখে মৃত্যুবরন করেন। ভিকটিম এখলাছ মিয়া(৩৩)‘কে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় নেত্রকোণার কেন্দুয়া থানা এলাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের চাচাতো ভাই মোঃ জসিম উদ্দিন(৫২), পিতা- মৃত আলী উছমান খান, সাং-পাছর (মাইজপাড়া), থানা-কেন্দুয়া, জেলা-নেত্রকোণা বাদী হয়ে স্ত্রী, শ্বশুর, শ্বাশুরী সহ অজ্ঞাতনামা ৩/৪ জন আসামীর বিরুদ্ধে নেত্রকোণার মদন থানায় একটি হত্যার চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। যাহার মামলা নং-১২, তারিখঃ ১৫/১১/২০২৩ খ্রি.,ধারাঃ ৩২৬/৩০৭/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০। পরবর্তীতে, ভিকটিম এখলাছ মিয়া(৩৩) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করিলে মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তরিত হয়। উক্ত ঘটনার পর থেকে আসামীগণ কৌশলে তাহাদের নিজ বাড়ি ত্যাগ করে গাঁ ঢাকা দিয়ে ছদ্মবেশে পলাতক ছিল।
৩। এরই প্রেক্ষিতে, বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের মাধ্যমে র্যাব-১৪, সদর ব্যাটালিয়ন এর উপ-পরিচালক অপারেশনস্ অফিসার মোঃ আনোয়ার হোসেন এর নেতেৃত্ব একটি আভিযানিক দল ২৩/১১/২০২৩ ইং তারিখ রাত্রি ০১.০০ ঘটিকায় ময়মনসিংহ মহানগরীর সানকিপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে হত্যা মামলার মূলহোতা আসামী ১। মোছাঃ মুক্তা আক্তার(২৮), পিতা-মোঃ খায়রুল ইসলাম, ২। মোছাঃ লুৎফুন নেছা(৫০), স্বামী- মোঃ খায়রুল ইসলাম, উভয় সাং-বাড়রী (সুতিয়ারপাড়), থানা-মদন, জেলা-নেত্রকোণা’কে আটক করতে সক্ষম হয়।
৪। ধৃত আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার নিমিত্তে নেত্রকোণা জেলার মদন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।