ঠাকুরগাঁওয়ের আদিবাসীরা ভাল নেই !
মোঃ মজিবর রহমান শেখ,,
গত একযুগে সর্বক্ষেত্রে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও বিশেষ করে ঠাকুরগাঁও জেলার আদিবাসীরা এখনও অতল গহবরে তলিয়ে যাওয়া স্রোতে ভাসছে । যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে তেমন অগ্রসর হতে না পারায় সুবিধাবঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীর শিক্ষার হার খুবই কম । সীমাহীন দারিদ্র্যের প্রান্ত সীমায় ২ শতাধিক পরিবার কোনরকমে দিনযাপন করছে । অর্থনৈতিকভাবে তারা রয়েছে নিদারুন সঙ্কটে। তাই ভাল নেই, এই জনগোষ্ঠীর মানুষ । এ রকম পরিস্থিতিতে প্রতি বছর ৯ আগস্ট পালিত হয় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। গত বারের এ দিবস পালনের প্রতিপাদ্য ছিল-“আত্ম নিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে আদিবাসী তরুণরাই মূল শক্তি।”আদিবাসী নিয়ে কাজ করেন এমন বিভিন্ন সূত্র জানিয়েছেন, সহজ সরল প্রকৃতির মানুষ আদিবাসীরা বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। তাদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ নানামুখী সমস্যা রয়েছে। তাদের আয়-রোজগারেরও তেমন সুযোগ সুযোগ-সুবিধা নেই। সুবিধাবঞ্চিত এই জনগোষ্ঠী এখন চরম আর্থিক সঙ্কটে রয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও তারা পিছিয়ে। কর্মসংস্থানের তেমন সুযোগ হয়ে উঠেনি।
আধুনিকতার চরম উৎকর্ষতার যুগেও আদিম সভ্যতার মধ্যে তারা এখনও ঘুরপাক খাচ্ছে । ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ঠান্ডিরাম কালিতলা গ্রামের পলি ঋৃষি বলেন, স্বাস্থ্য , শিক্ষা , স্যানিটেশন ও কর্মসংস্থানের অভাবে তারা অমানবিক ভাবে দিন যাপন করছেন । ভাদ্র-আশির্^ন এলে তাদের অনাহারে দিন কাটাতে হয় । অনেকে আগাম শ্রম বিক্রি করে দিনগুজরান করে। এছাড়া তাদের জায়গা-জমি কৌশলে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। তাদের বনজসম্পদও বেহাত হয়ে যাচ্ছে। এসব কারণে মসহুর সহ সাওতাঁল, মুন্ডা, ওরাঁও আদিবাসীরা ভাল নেই। তাই তারা চায় আদিবাসীদের উন্নয়নে সরকার সুদৃষ্টি দিয়ে বিশেষ উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি রবীন্দ্র নাথ সরেন জানান, সার্বিকভাবে আদিবাসীরা ভাল নেই। চরম অর্থনৈতিক সঙ্কট ও অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে আদিবাসীরা। এখনও তাদের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। আদিবাসীদের জন্য সরকারের বিশেষ উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নেয়া উচিত। আদিবাসীরা আগে থেকেই গরিব ও সুবিধাবঞ্চিত। এখনও তারা চরম অর্থনৈতিক সঙ্কটে।তিনি বলেন, বিশেষ করে সমতল অঞ্চলের আদিবাসীদের জীবনমান করুণ পরিণতি বিরাজ করছে ।