তাড়াশে ট্রিপল মার্ডার ঘটনার মূল আসামী গ্রেফতার ও হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত উদ্ধার
মোঃ নাঈম উদ্দিন সিরাজী, স্টাফ রিপোর্টার সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জে তাড়াশে একই পরিবারের ৩ সদস্য খুনের একমাত্র আসামিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আসামি রাজিব কুমার ভৌমিক(৩০) পিতা- স্বর্গীয় বিশ্বনাথ ভৌমিক গ্রাম- তেলীপাড়া, থানা- উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক (৩৫) এবং ভিকটিমগণ পরস্পর আত্মীয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার এর বোন প্রমিলা রানীর ছেলে রাজীব কুমার ভৌমিক। হত্যাকারী তার বাবা মারা যাওয়ার পর ২০২১ সাল থেকে মামা বিকাশ চন্দ্র সরকারের সাথে যৌথভাবে খাদ্যশস্য কেনাবেচার ব্যবসায় যুক্ত হয়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তার ভাগিনা রাজীর কুমার ভৌমিককে ব্যবসার পুজি হিসেবে ২০ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। ব্যবসা চলমান থাকাকালীন হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক তার মামাকে বিভিন্ন ধাপে ব্যবসার লভ্যাংশ'সহ প্রায় ২৬ লক্ষ টাকা ফেরত দিলেও চলতি বছরে এসে হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিকের কাছে তার মামা ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার অতিরিক্ত ৩৫ লক্ষ টাকা দাবী করেন। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার বিগত ২২/০১/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে দাবিকৃত টাকা ৭/৮ দিনের মধ্যে ভাগিনাকে ফেরত দেয়ার জন্য অনেক চাপ দেয় এবং টাকার জন্য হত্যাকারী ও তার মা (ভিকটিমের বোন)কে ফোনে অনেক বকাবকি করে। হত্যাকারী রাজীব কুমার ভৌমিক টাকা ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং মামার বকাবকিতে মনঃকষ্ট পাওয়ায় তার মামাসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে। এরই ফলশ্রুতিতে বিগত ২৭/০১/২০২৪ খ্রিঃ তারিখে বিকেল ১৬.৪৮ ঘটিকায় মামাকে ফোন করে পাওনা টাকা নিয়ে বাসায় আসতে চায়। ভিকটিম বিকাশ চন্দ্র সরকার তাড়াশের বাহিরে থাকায় তার ভাগিনাকে টাকা নিয়ে সরাসরি তার তাড়াশের বাসায় এসে মামীর সাথে সাক্ষাৎ করে বাসাতেই থাকতে বলেন। হত্যাকারী রাজীব কুমার বাসায় মামার অনুপস্থিতির সুযোগে তার মামী এবং মামাতো বোন তুষিকে হত্যার পরিকল্পনা করে। হত্যাকারী রাজীব কুমারকে কফি খাওয়ানোর জন্য তার মামী সন্ধ্যাকালীন পূজা শেষে বাসার নিচে দোকানে গেলে হত্যাকারী রাজীব ব্যাগে করে আনা লোহার রড দিয়ে তার মামাতো বোনের মাথায় উপর্যুপুরি আঘাত করে এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেললে হাসুয়া দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে। ইতোমধ্যে তার মামী কফি কিনে বাসায় প্রবেশ করলে তার মামীকেও একইভাবে রড দিয়ে মাথায় কুপিয়ে এবং গলাকেটে হত্যা নিশ্চিত করে। মামী এবং মামাতো বোন তুষিকে হত্যার কিছুক্ষণের মধ্যে তার মামা বাসায় ঢুকলে তার মামাকেও প্রথমে রড দিয়ে আঘাত করে এবং গলাকেটে হত্যা নিশ্চিতের পর লাশ টেনে বেডরুমে রেখে রুমে তালা মেরে উল্লাপাড়া ফিরে যায়। যাওয়ার পথে সে লোহার রড একটি পুকুরে ফেলে যায় এবং রক্তমাখা হাসুয়াসহ ব্যাগটি নিজ বাড়িতে রাখে।
সিরাজগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার জনাব মোঃ আরিফুর রহমান মন্ডল, বিপিএম (বার), পিপিএম (বার) বিকাল ৪ ঘটিকায় এক প্রেস ব্রিফিং করে এই তথ্য প্রদান করেন।