” মুল দায়িত্ব ও বাস্তবতায় বিস্তর ফারাক প্রায় প্রতিটি ব্যাক্তির ” !!
[ প্রসঙ্গ : ঢাকা বিমানবন্দর রেলস্টেশনে অবৈধ কর্মকাণ্ড ]
অনুসন্ধানী বিশেষ প্রতিবেদন (এস. হোসেন মোল্লা) —
রাজধানীর বিমানবন্দর রেলস্টেশনে বহু বছর যাবত পরিকল্পিত ভাবে বিবিধ অপরাধে জড়িত প্রতিষ্ঠিত ভয়ংকর সিন্ডিকেট বাহিনী। যুগে যুগে বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসব ঘটনা প্রকাশিত হওয়ায় এদের লোক দেখানো অদলবদল ঘটলেও কোন ব্যাবস্থাতেই সেই অনিয়ম নির্মুল করা আদৌ সম্ভব হয়নি বলেই প্রতীয়মান হয়।
বিশেষ অনুসন্ধানে জানা যায়, এই স্টেশনের প্রায় প্রতিটি ব্যাক্তির মুল দায়িত্বের সাথে বাস্তবতার বিস্তর ফারাক। যা অতি রহস্যময়, প্রশ্নবিদ্ধ ও উদ্ভট! নিত্যই যেন তারা মগ্ন থাকে অবৈধ রোজগারের ধান্দায়। কোনো যাত্রীর কাছে টিকিট না পেলে তাদেরকে স্টেশনের প্লাটফর্মের আশপাশে ডেকে বিভিন্ন অংকের টাকা জরিমানার পাশাপাশি সুযোগ বুঝে উপঢৌকন নেয়ায় ব্যাস্ত থাকে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী। এই বাহিনীদের মাঝে মধ্যে টিকিট বিক্রির কাজ করতেও দেখা গেছে। আর টিকিট কালোবাজারীরা অনেক ক্ষেত্রে সাজানো নাটকের মতো আটক হলেও কিছুদিন পরই তাদেরকে আবারও সেই কাজেই গোপন অনুমতির মাধ্যমে আরও দাপটের সাথেই দেখা যায়। টিকিট চেক করার জন্য নিয়োগ প্রাপ্ত টিটিই থাকলেও বেশির ভাগই তাদের জায়গা মতো দেখা পাওয়া যায়নি। এই আরএনবি ও জিআরপি সদস্যরা নানান অপকর্ম ঘটান নির্দিষ্ট সিসি ক্যামেরার বাইরে।এমনকি অপকৌশলে তাদের নেমপ্লেট খুলে ডিউটি করেন নিজের দুর্নীতি লুকোনোর উদ্দেশ্যে। ট্রেন এসে পৌছলেই হরদম যেনো তারা টাকা লুটপাট প্রতিযোগিতায় লেগেই থাকে !
তাছাড়াও গণমাধ্যম ও মানবাধিকার কর্মীদের গোপন অনুসন্ধানে ঢাকা বিমানবন্দর স্টেশন এলাকায় অবৈধ দোকানপাট,মাদক ব্যাবসায়ী,মাদকাসক্ত,পকেটমার,হাইজ্যাকার,মলম পার্টি, চোর,পতিতা,হিজড়া, দালাল, হকার,ভিক্ষুকদের আস্তানা হিসেবেই দেখা গেছে । যার কারনে প্রায়ই শোনা যায় যাত্রীদের কেউ অজ্ঞান পার্টি,কারোর মোবাইল চুরি,কারোর মানিব্যাগ ছিনতাইয়ের খপ্পরে পরা সহ বিভিন্ন ঘটনা। এই নিয়ে বহুবার লেখালেখির কারণে লোক দেখানো আনকোরা ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হলেও কিছুদিনের মধ্যেই সবকিছুই ধামাচাপা দিয়ে নব উদ্দমে আবারও চালু হয়।
এদিকে স্টেশন মাস্টার মাহমুদুল হাসানকে কখনোই তার আসনে দেখা যায়নি।তবে তাকে কম্পিউটার অপারেটর রুমে পাওয়া গেলে কথা বলতে চাইলে তিনি এড়িয়ে যাবার ছলে বলেন, এ বিষয়ে আরএনবির সিরাজ সাহেবের সাথে কথা বলেন।তিনি আরও বলেন,” জাতীয় কোন পত্রিকাই আমি যেখানে পড়িনা, আপনারা আবার কোন পত্রিকার,এসব শুনে আপনাদের কি কাজ “! এই মাহামুদুল সম্পর্কে গোপন সুত্রে জানা যায়,স্টেশনের ভিতর-বাহিরের সকল প্রকার অনিয়ম ও সমস্ত অবৈধ আয়ের সিংহভাগ গুপ্ত লুটেরাই নাকি তিনি!মেইন রোডের ওভার ব্রিজের নিচের রুমটি অবৈধ দোকানীদের জুতা রাখার জন্য ভাড়া চলছে তারই ঈশারায়!যে কোন মুহুর্তে সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলতেও তিনি দারুণ পটু বটেই! এই স্টেশনের সিরাজের (এসআই,আরএনবি) বক্তব্য নিতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে জানা গেছে, এখানকার সমস্ত অপকর্মের বিষয়ে তিনি অবগত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি। এই সিরাজ বিভিন্ন দোকান বসানোর কাজে সক্রিয় দায়িত্ব পালন করেন।তাছাড়াও তিনি প্রকাশ্যেই সাংবাদিকদের বলে বেড়ান যে,”আপনারা যতই লিখুন না কোনো,কোনদিন কিছু হয়নি, হবেও না!”
এই রেলস্টেশনে আরও আছে প্রভাবশালী কুখ্যাত মাদক সম্রাজ্ঞী মৌসুমী!এই রূপসী মহিলা বিভিন্ন মাদকের অভিজ্ঞ ও পুরাতন ডিলার। সে বহুবছর যাবত নিজস্ব সিন্ডিকেট সহ স্টেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মীদের দিয়ে জোরপূর্বক মাদক বিক্রি ও সাপ্লাই এমনকি পতিতার দালালী করে আসছে। কেউ কোন কাজে অনিহা প্রকাশ করলেই নানান বিপদ ও নির্যাতনের শিকার হতে হয় এই মৌসুমীর ঈশারায়। ইদানিং সেখানে চা-বিক্রেতার বেশে সাধু হয়ে সে উক্ত এলাকায় আনাগোনা ও অপকর্মের বৈধতা আরও পাকাপোক্ত করেছে স্টেশনের কতিপয় অসাধুচক্রের কুটিল পরামর্শ ও সহযোগিতার বদৌলতে। এই যুবতী মৌসুমীর সাথে স্টেশনের চাকুরেদের অনৈতিক সখ্যতার গুপ্ত রহস্য আজও অধরা !
আরও খবর নিয়ে জানা যায়, স্টেশনের বাহিরে পূর্ব ও পশ্চিমে কার পার্কিংয়েও বখাটেদের উৎপাত চরমে।কোনো নারী যাত্রীদের দেখলেই এরা সন্দেহজনক নোংরা সুরে বলে “হোটেল লাগবে হোটেল! কম খরচে আবাসিক হোটেল ” ইত্যাদি!তাছাড়াও তথ্য কেন্দ্রের তথ্য দাতাকে উপস্থিত দেখা যায় না বললেই চলে । প্রায় সেখানে বসে থাকতে দেখা গেছে স্টেশনের চাকুরেদের দাপুটে স্বজনদের।
আরও জানা গেছে, এই স্টেশনের পূর্ব-পশ্চিম পাশে রেলের জায়গায় গড়ে উঠেছে অসংখ্য অবৈধ ভ্রাম্যমান দোকান। প্রতিদিন সন্ধ্যায় এই দোকানগুলো থেকে টাকা তোলে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত দাপুটে লাইনম্যান । এদের মধ্যে মাতাল ফারুক ও বাইট্টা আব্দুল করিম নামের উপাধিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের চাঁদার টাকা তুলতে দেখা যায়।এই ফারুকের কাছে টাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত কন্ঠে বলেন, “এসব আপনাদের জানার দরকার নেই। এখানে দোকান বসালে চাঁদা দিতেই হবে।এই টাকা অবশ্যই স্টেশনের অফিসারদেরই প্রাপ্য”!গোপন খবরে জানা গেছে, এই মাতাল ফারুক পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর পরম বন্ধু ও প্রানের প্রান!সে কিনা নেশাগ্রস্থ থাকে ২৪ ঘন্টাই । আর মাদক বিক্রি,পতিতার দালালি সহ দোকানের টাকা তুলে পুলিশের পকেটে দেন এবং নিজে এই টাকার ভাগ নিয়ে বেশ সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে ও আরাম-আয়েশে দুটি স্ত্রীর ভরনপোষণ চালান। এই দাপুটে মাতাল ফারুক অবৈধ আয় দিয়ে তার আপন ভাইকে বিদেশে পাঠাতেও সক্ষম হয়েছেন।