মোঃ মজিবর রহমান শেখ
ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার রক্তিম রঙে রঙিন হয়ে উঠেছে শিমুল গাছের ফুল। শুধু ফুল আর ফুল পাতা নেই, ফুটন্ত এ ফুল যেন দৃৃষ্টি কেড়ে নেয় সবার মন। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার সালন্দর চৌধুরী হাট ঠাকুরগাঁও জেলা মৎস্য অফিসের সামনে ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় রাস্তার উপরে দেখা মিলল ফুটন্ত ফুলের রক্তলাল শিমুল গাছের। গাছে গাছে ফুটন্ত রক্ত লাল শিমুল
যেন চারদিকে ছড়িয়ে দিচ্ছে এই লাল রঙ।
এরপরই এই রক্ত লাল থেকে সাদা ধূসর হয়ে তৈরি হয় তুলা । কিন্তু এখন বিভিন্ন প্রযুক্তিতে তুলা তৈরি ও ফোম ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার অনেকটা কমে গেছে। তুলার ব্যবহার নেই বললেও চলে ।
আজ থেকে প্রায় ২ দশক আগে গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গা শোভাবর্ধনে ঝুলে থাকতো শিমুল ফুল । তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে সেখানে চোখে পড়েনা রক্তলাল শিমুল গাছ । মূল্যবান শিমুল গাছ এখন বিলুপ্তির পথে। ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার গড়েয়া এলাকার বৃদ্ধ প্রফুল্ল বলেন, শিমুল গাছ ঔষধি গাছ হিসেবে পরিচিত। ছোট শিমুল গাছের মাটির নিচের অংশ মূলের উপকারিতা অনেক । ভেষজ চিকিৎসা কাজে এই গাছের রয়েছে নানাবিধ ব্যবহার । গ্রামঞ্চলের মানুষ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে শিমুলের রস ও কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময়ে গাছের মূলকে ব্যবহার করতো । বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ জিল্লুর রহমান,জানান, গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত । মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক, বালিশ । শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে । কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের । ঠাকুরগাঁও জেলার সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নজরুল ইসলাম বলেন, কালের বিবর্তনে হারিয়ে যেতে বসেছে শিমুল গাছ । শিমুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরিকৃত ফার্নিচার খুব বেশি স্থায়ীত্ব হয় না । এছাড়া বিভিন্ন ফোমের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় শিমুল তুলা ব্যবহার কমে গেছে । ফলে শিমুল গাছ হারিয়ে যাওয়ার পথে।