মাটি মামুন রংপুর
রংপুরে দিন দিন বেড়েই চলছে সমবায় সমিতির নামে প্রতারণা ও জালিয়াতিসহ বলপুর্বক আদায় সংক্রান্ত নানা অভিযোগ।
হয়তো কখনো তা থেকে যায় লোক চক্ষুর আড়ালে বা কখনো নির্ভুতে কান্দে অসহায় সেই ঋণগ্রস্থ পরিবারের মাঝে।
অথবা মাসের পর মাস বিভিন্ন সরকারী সংস্থায় ধর্না দিয়েও পাওয়া যায় না এর প্রতিকার।
প্রতিবাদ করলেও হয় নানান সমস্যা এমন কি জীবননাশের হুমকি।
এমনে ঘটনা ঘটেছে রংপুর নগরীর দর্শনা এলাকার ১৫ নং ওয়ার্ডের আক্কেলপুর গ্রামের ছোট মুদি দোকানী রশিদুল হকের সাথে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের ঋণ নিয়ে।
সরজমিনে কথা হয় ভুক্তভোগী রশিদুল হকের সাথে। তিনি জানান,৩১ ডিসেম্বর ২২ ইং সালে করোনার পর গরীব মানুষ যখন সর্বশান্ত ঠিক তখনেই টার্গেট নেয় এই সমিতির লোকজন এই আক্কেলপুরে।
চড়া সুদে ঋণের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় গ্রামের সহজ সরল মানুষকে নানা কৌশলে ফেলিয়ে তাঁদেরকেও নাজেহাল করেছে বলে জানান রশিদুল হক।
তিনি আরো বলেন শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি থেকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ নেওয়ার পর তা সুদসহ পরিশোধের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে পরেন তিনি মহাবিপদে।
তাঁর সেই ছোট মুদি দোকানটি রাস্তার প্রশস্তকরন কাজের কারনে দোকান সরিয়ে অন্যত্রে নেওয়ার কাজের জন্য কিস্তির টাকা দিতে অপরাগ হইলেই বিপদ নেমে আসে রশিদুলের জীবনে। শুরু হয় একের পর এক সুপার ভাইজারদের আনাগোনা।
ভয়ভীতি এমনকি জীবন নাশের হুমকি।
জানুয়ারি ২৪ইং তথাকথিত অলিউল্লাহ নামে একজন লিগ্যাল নোটিশ পাঠায় আমার বিরুদ্ধে। সেখানে উল্লেখ আছে আমি চেক মারফত তাঁর কাছ থেকে ৩ লাখ ধার নিয়েছি সেই টাকা ৩ মাসের মধ্যে না দিলে আমাকে জেলের ভাত খাওয়াবে।
যে চেকটি নিয়েছিল ঋণ নেওয়ার পুর্বে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতি আমার কাছ থেকে। যার নম্বর ১১৮২ ৩২৫৩০৫৪ হিসাব নং ০২০০০১২৮১৬৫৪২।
পরে ভয়ে আমি আমার বাড়ীর হাঁসমুরগি বিক্রি করে সমিতিতে সমুদয় অর্থ পরিশোধ করার পরেও তাঁরা আমার কাছে উকিল খরচ বাবদ আরো ৫ হাজার টাকা গ্রহন করে।তাই শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির এহেন কাজের জন্য আমি বিভিন্ন সরকারী সংস্থায় এব্যাপারে অভিযোগ পত্র দায়ের করেছি।
এব্যাপারে সমিতির ম্যানেজার মোসফেকুর রহমান সাহেদ বলেন,লিগ্যাল নোটিশ কে করেছেন তিনি জানতেন না।
তিনি বলেন সমিতির নামে ৩ লাখ টাকার লিগ্যাল নোটিশ কেউ রশিদুল কে দেন নাই।
বিষয়টি রংপুর জেলা সমবায় কর্মকর্তা বিসিএস(সমবায়) মোঃ আব্দুস সবুর কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান দর্শনার মোড় এলাকার শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির নামে এমন অভিযোগ পেয়েছি তদন্ত করা হচ্ছে।তদন্তে প্রমানিত হলে সমবায় আইনে কঠোর
ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।যদি শিখা ভোগপন্য সমবায় সমিতি এরকম গ্রাহক হয়রানী বা ব্যাংকের মতো রীতিনিতি বা ফাঁকা ষ্ট্যাম্প জমা কিংবা গ্রাহকের আমানত বা ব্যাংকের ব্ল্যাঙ্ক চেক ঋণের বিপরীতে জমা নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিধিমালায় সমবায় সমিতিতে ব্যাংকের ফাঁকা চেক কিংবা স্ট্যাম্পের বিপরীতে আর্থিক লেনদেন নিষিদ্ধ হলেও থেমে নেই ব্যবসা।
গ্রাহকদের অভিযোগ ঋণ গ্রহনে দিতে হয় ফাঁকা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর।নেওয়া হয় ব্যাংকের ব্ল্যাংক চেক।এনিয়ে চরম বিপাকে ঋণগ্রস্থ ভুক্তভোগী পরিবার গুলো।
রংপুরে অধিকাংশ সমবায় সমিতিতে নেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র ঋণের নামে আমানত।পরিচালিত হচ্ছে ব্যাংকের নিয়মে সমবায় সমিতি।
প্রতারনা ও জালিয়াতিসহ বলপুর্বক অভিযোগ উঠেছে শিখা ভোগ্যপণ্য সমবায় সমিতির বিরুদ্ধে।আর এ চিত্র রংপুর জেলা জুড়ে।