মোঃ সেলিম হোসেন
চলিতে পথ দেখিলো সাধু সাজাপ্রাপ্ত চোর,
হাঁটিতেছে তফাতে তাঁর করি’ হস্ত জোড়।
মস্তষ্ক নত, বাকরূদ্ধ তা’র লজ্জিত নিশ্চুপ,
নয়ন যুগল’ অনুতাপে আড়ষ্টতার রূপ।
সাধু তা’রে দেখিয়া হায় ভালে তুলি’ হাত,
‘হায়! হায়! হায়! এ’কি দেখি গেলো বুঝি জাত।
চৌর্যবৃত্তি করিয়া যে সাজাপ্রাপ্ত হয়,
আর যাই বলো, সে-তো কভু গ্রহণযোগ্য নয়।
কি-গো তোমরা কে-বা কোথায় আছ আজি ভাই,
গেলো গেলো সবই আজি চোর নিয়েছে ঠাঁই।
সভ্যসমাজ, লাগিলো কলঙ্ক পুড়িলো তোমার মুখ,
হটাও হটাও এই পাপিষ্ঠ পেতে সকলের সুখ।’
স্ব গৌরবে চেঁচাচ্ছে সাধু বলিয়া জনে জনে,
এহেন শুনিয়া চোর হাসিয়া কহে মনে মনে।
‘দায়ের চাপে করিয়া ভুল দণ্ডপ্রাপ্ত হই,
মামুলি পাপের অভিশাপ থেকে আজও মুক্ত নই।
তুমি ওহে ভণ্ড সাধু গাহিছো পরেরে দোষ,
স্বার্থের মোহে করিছো ‘মন্দ’ আছে কি সেই হুঁশ?
হিংসা, গর্ব, অহংকার, ব্যভিচারে আছ মত্ত,
কুকিল কণ্ঠে মিথ্যা কে বানাইতেছ সত্য।
দেখিতেছেন তিনি বাজাও সাধু তোমার ঢোল,
মনোলোভা স্বরে গেয়ে যাও যত মিথ্যা বোল।”
সাধুর হাঁকডাক শুনিয়া জ্ঞানী আসিল সেথায়,
সকলি শুনিয়া জ্ঞানী তখন বিচারের গান গায়।
বলিলেন জ্ঞানী সাধুকে, ‘তবে শুনো বেশ,
অনুতপ্ত দণ্ডপ্রাপ্ত যার দণ্ড হইয়াছে শেষ।
সে কি আর ধারণ করে অপরাধী পরিচয়,
সাথে রাখো তারে পেয়ো নাকো আর ভয়।
সকলের মতো তারও আছে বাঁচার অধিকার,
তবে কেনো তারে হেয় করে করে দাও ঘরের বার?’
তাই শুনিয়া সাধু ক্ষুন্ন মনে গাহে নতুন সুর,
অদৃশ্য হয়ে অপরাধ এগিয়ে চলে বহুদূর।