মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি
চরম সংকটের মধ্যে দিনাতিপাত করছে ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বাঁশ মালী পরিবারগুলো। পরিবার পরিজন নিয়ে ২৫টি ভূমিহীন পরিবারের প্রায় শতাধিক মানুষ রয়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়। দিন আনতে পান্তা ফুরোয় অবস্থা। বাঁশ মালী করে এক বেলা খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন এ সম্প্রদায়ের মানুষ জন। সরেজমিনে দেখা যায়, ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বামুনদিঘীর পাড়ে এই পরিবারগুলোর বসবাস। ১৯৭৫ সাল থেকে এখানে তারা কুড়েঘর ও ছাপড়া বানিয়ে জরাজীর্ণ পরিবেশে দিনাতিপাত করছে। এই পরিবারগুলোর মধ্যে রয়েছে ১৮টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর, যাদের বংশানুক্রমে পেশায় বাঁশ মালী। আর ৭টি পরিবার হচ্ছে আদিবাসী। কৃষিকাজ বা চাষাবাদের জন্য তাদের নিজস্ব কোনো জায়গা-জমি নেই। বাঁশ মালী, দিনমজুর আর শ্রমিকের কাজ করে চলে তাদের সংসারের ঘানি। পুকুর পাড়ে বসবাসকারী বিভোতি রানী (৫৫), সরলা দাস (৭০), বুধু হেমরম (৬০), লক্ষ্মী মারডি (৮০)সহ বেশ কয়েকজন নারী সাংবাদিকদেরকে বলেন, আমরা এখানে ৪৯ বছর ধরে বসবাস করে আসছি। পেশায় আমরা বাঁশ মালী। হাটবাজার ও গৃহস্থের বাড়ি থেকে বাঁশ কিনে বাড়িতে কৃষিকাজের ব্যবহৃত টোকরি, কুলা, ঢাকি, ডালি, হাতপাখা সহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে যে টাকা পাই তা দিয়েই জীবিকা নির্বাহ করি। বর্তমানে প্লাস্টিকের ব্যবহার বৃদ্ধি পাওয়ায় আমাদের পণ্যের কদর কমে গেছে। বাঁশও পাওয়া যায় না তেমন আবার দামও বেশি। এ অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে জীবিকা নির্বাহ কঠিন হয়ে পড়েছে।
তারা আরও বলেন, আমরা সরকারি সুযোগ-সুবিধাও তেমন পাই না। আমাদের খোঁজখবর কেউ রাখে না। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের বাড়ি ও জমি পাওয়ার জন্য আমরা ইউএনও স্যারের নিকট গিয়েছিলাম, কিন্তু আমরা বাড়ি পাইনি। এলাকার বিভিন্ন জায়গায় খাসজমি ও পুকুর পাড়ে যারা বসবাস করছিল, তারা সকলেই বাড়ি ও জমি পেলে আমরা কেন পাব না।