কে.এম. হাছান
চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলার গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজের এডহক কমিটি নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার বেলা ১১ ঘটিকায় স্হানীয় বিএনপির দুই গ্রুফের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। জানা যায়, গতকাল বুধবার কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুনুর রশিদ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট এডহক কমিটি জমা দিতে যায়। কিন্তু, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সিঁড়ি থেকেই চিহ্নিত কয়েকজন শিক্ষকদের হাত থেকে কমিটির কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরক্ষণেই শিক্ষকদের নিকট গচ্ছিত অন্য আরেক কপি নির্বাহী অফিসারের নিকটৃ জমা দেন। এসব নিয়ে বিএনপি'র দুই গ্রুপের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকালে গল্লাক আদর্শ ডিগ্রী কলেজে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। ঘটনার সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময় করে চলে যাওয়ার সময় এই উত্তেজনা বিরাজ করে।
স্হানীয়দের সুত্রে জানা যায়,বিএনপির দুই গ্রুফের সমর্থক তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে এড হক কমিটির প্রধান করতে চায়। এলাকার বিশাল একটি অংশ, ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবক চায় উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক এবং অত্র কলেজের সাবেক মেধাবী ছাত্র মাহবুবু মোরশেদ কচি পাটোয়ারী হবে এডহক কমিটির প্রধান। অনুরূপ, এলাকার অন্য আরেকটি অংশ চায় উপজেলা বিএনপির যুগ্মআহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ হবে এডহক কমিটির প্রধান।
তবে, উপস্থিত অনেকে জানান গল্লাক আদর্শ ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে কলেজের অবকাঠামো উন্নয়নে মাহবুব মোরশেদ কচি এর পিতা শাহাজান চেয়ারম্যান ও তাদের পরিবারের অনেক অবদান আছে। প্রতিষ্ঠানটির এই ক্রান্তিলগ্নে ঐ পরিবারের সদস্য মাহবুব মোরশেদ কচি পাটোয়ারীকে সভাপতি দিলে প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন ও শিক্ষার মান বৃদ্ধি হবে।
কলেজের সহকারি শিক্ষক ওমর ফারুক বলেন, কুমিল্লার মধ্যে সেরা কলেজ ছিল আমাদের ফরিদগঞ্জ গল্লাক আদর্শ ডিগ্রি কলেজ। কলেজ প্রতিষ্ঠিত হতে অনেক রক্ত ঝরেছে। আমরা আমাদের কলেজকে কুমিল্লাসহ বাংলাদেশের সেরা কলেজ হিসেবে রূপান্তরিত করতে চাই।এডহক কমিটি নিয়ে দুই গ্রুফের মধ্যে যে দন্ধ তা অবসান করে সবাই কলেজের উন্নয়নে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।
উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব মোরশেদ কচি বলেন, আমাদের পরিবারের এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে অনেক শ্রম আছে, ঘাম ঝরিয়েছি, সরকারি নির্দেশনায় গতকাল কলেজের কয়েকজন শিক্ষক ফরিদগঞ্জ উপজেলায় এডহক কমিটি জমা দিতে গেলে একদল লোক শিক্ষকদের হাত থেকে ফাইল নিয়ে যায়। এবং কলেজের সিনিয়র শিক্ষক, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হারুন স্যারের সাথে ওই দুর্বোত্তরা অত্যন্ত খারাপ আচরণ করে। আমি ফরিদগঞ্জ থাকায় উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তার কাছে বিষয়গুলো উত্থাপন করে আসছি। তারই প্রেক্ষিতে আজ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ বিএনপির বিভিন্ন লোক নিয়ে কলেজে অবস্হান করে কলেজের পরিবেশ নষ্ট করছে।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডাঃ আবুল কালাম আজাদ শিক্ষকদের সাথে মত বিনিময় কালে বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের কাছ থেকে কে বা কারা শিক্ষকদের হাত থেকে এডহক কমিটির কাগজ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না। তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার মান উন্নয়নে একটি মানসম্মত কমিটি গঠন করা হোক এটা তিনি উত্থাপন করেন।
উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা মৌলি মন্ডল বলেন, এডহক কমিটিকে নিয়ে গল্লাক কলেজে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তা আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে আমি তাদের সাথে কথা বলবো।
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর থেকে উক্ত কলেজের অধ্যক্ষ হরিপদ দাস প্রতিষ্ঠানে অনুউপস্হিত বলে জানা যায়। এবং ওই অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম নিয়ে গত কয়েকদিন কলেজ ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রকমের আন্দোলন হচ্ছে বলে জানা যায়।