গফরগাঁওয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে ডাকাতি করতে গিয়ে গ্রেফতার-৩
মোঃ শাহীন আলম
নান্দাইলের দেওয়ানগঞ্জ বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন গত ০৮/১০/২০২৩ তারিখ দুপুর ১২.১০ ঘটিকায় ইসলাম ব্যাংকের ভালুকা শাখা থেকে ব্যাবসা পরিচালনার জন্য নিজের একাউন্ট থেকে ১৬,০০,০০০/-(ষোল লক্ষ) টাকা উত্তোলন করে ০৫ জন যাত্রীসহ সিএনজি যোগে গফরগাঁও থানাধীন এশিয়ান হাইওয়ের রাওনা টানপাড়া এলাকায় পৌঁছালে একটি সাদা প্রাইভেটকার সিএনজিটি গতিরোধ করে এবং ০৩ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে তাকে জোরপূর্বক প্রাইভেটকারে উঠিয়ে গামছা দিয়ে চোখ বেঁধে ১৬,০০,০০০/-(ষোল লক্ষ) টাকা ও সাদ্দাম হোসেন এর ব্যবহৃত ০২ টি মোবাইল ফোন ডাকাতি করে। সাদ্দাম হোসেনের হাত ও চোখ বেঁধে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানাধীন ভান্নারা বাজারে রাস্তার পাশে ফেলে দিয়ে তারা প্রাইভেটকারটি নিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় গফরগাঁও থানায় একটি ডাকাতি মামলা (মামলা নং-০৭, তারিখ-১০/১০/২০২৩ ইং ধারা-১৭০/৩৯৪/৩৪ পেনাল কোড) রুজু হয়।
জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার-ইনচার্জ মোঃ ফারুক হোসেন এর নেতৃত্বে এসআই(নিঃ) শাহ্ মিনহাজ উদ্দিন, এসআই(নিঃ) রেজাউল আমীন বর্ষন, এসআই(নিঃ) পরিমল চন্দ্র সরকার, পিপিএম, এসআই(নিঃ) কমল সরকার, এসআই(নিঃ) শ্রী রূপন কুমার সরকার ও সঙ্গীয় ফোর্সসসহ একটি চৌকষ টিম ডাকাতির রহস্য উদঘাটনকল্পে ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকা জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ধারাবাহিকভাবে অভিযান পরিচালনা করে এবং আজ ১৩/১০/২০২৩ তারিখ রাত ০২.১০ ঘটিকায় ডাকাতদলের অন্যতম সদস্য ১। মোঃ আনোয়ার হোসেন (৩৯), পিতা-মোঃ মোস্তফা মোল্লা, ঠিকানা-কোনাবাড়ী, উল্লাপাড়া, সিরাজগঞ্জ-কে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের সদর থানাধীন লক্ষীপুরা তালুকদার পুকুরপাড় এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এরপর রাত ০৪.৫০ ঘটিকায় ঢাকা জেলার সাভার থেকে ডাকাতির মূল পরিকল্পনাকারী ২। লিটন কাজী@দেলোয়ার কাজী (৪০), পিতা-মোঃ মোতালেব কাজী, ঠিকানা- ঠাকুর নওয়াপাড়া, বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী এবং তাহার সহযোগী অপর ডাকাত ৩। মোঃ রুবেল মিয়া (৩২), পিতা-মোঃ আজাদ মিয়া, ঠিকানা- গোপালগঞ্জ সদর, গোপালগঞ্জ-দ্বয়কে গ্রেফতার করা হয়।
ধৃত ১ নং আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৮০,০০০/- টাকা, ২ নং আসামী লিটন কাজী@ দেলোয়ার কাজীর কাছ থেকে লুণ্ঠিত ২,৫০,০০০/- টাকা এবং ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেটকার এবং ৩ নং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার কাছ থেকে (৩২) লুণ্ঠিত ১,৪০,০০০/-টাকা (সর্বমোট চার লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা উদ্ধারপূর্বক জব্দ করা হয়। এছাড়াও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ডিবি’র কোটি, হ্যান্ডকাফ ইত্যাদি জব্দ করা হয়েছে।
আসামীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, গত ৮ অক্টোবর ২০২৩ তারিখ সকাল ৯.০০ ঘটিকায় গাজীপুর চৌরাস্তায় ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজী অপর আসামী মোঃ আনোয়ার হোসেন ও মোঃ রুবেল মিয়াসহ পলাতক ৫/৬ আসামী একত্রে ডাকাতির পরিকল্পনা করে। তারা তিন ভাগে ভাগ হয়, ৫ জন প্রাইভেটকারে, ০৩ জন মোটর সাইকেলে ও বাকী ০২ জন ডাকাত লোকাল বাসে দুপুর ১২:০৯ ঘটিকা নাগাদ ইসলামী ব্যাংক পিএলসি’র ভালুকা শাখায় পৌঁছায়। পলাতক আসামীদের একজন ভিকটিম সাদ্দাম হোসেনকে নজরে রাখে। কিছুক্ষণ পর সাদ্দাম হোসেন টাকা নিয়ে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে একটি ভাড়ায় চালিত সিএনজিতে গফরগাঁওয়ের দিকে রওনা করলে পরে ডাকাতরা মোটর সাইকেল ও প্রাইভেটকারযোগে সিএনজিকে অনুসরণ করতে থাকে এবং শান্তিগঞ্জ নামক নির্জন সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছালে ডাকতরা ডিবি পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করে এবং সাদ্দাম হোসেনকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে ও চোখ বেঁধে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে পরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানায় রাস্তার পাশে গাড়ী থেকে ফেলে দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
উল্লেখ্যে যে, ডাকাতির মূলহোতা আসামী লিটন কাজীত বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১০টিরও অধিক ডাকাতিসহ দস্যুতা ও মাদক মামলা এবং আসামী মোঃ রুবেল মিয়ার বিরুদ্ধে ০২টি ডাকাতি মামলা রয়েছে। ইতোপূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামীসহ পলাতক আসামীরা ভালুকা থানাধীন জামিরদিয়া এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে র্যাবের পোষাক পরিধান করে প্রাইভেটকারে জনৈক মোহাঃ শুভান আলী শুভকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ৭,৪০,০০০/-টাকা ও ০১ টি মোবাইল এবং বাদশা গ্রুপের ইয়ার্ণ টেক্সটাইলের সামনে থেকে ৫,০০,০০০/- টাকা ডাকাতি করেছিল।
আসামীদের বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করার প্রক্রিয়া এবং জড়িত অপর আসামিদের গ্রেফতার ও লুন্ঠিত টাকা উদ্ধারে অভিযান অব্যহত আছে।