কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রামখানা ইউনিয়নে এক ব্যবসায়ীর গোডাউন থেকে টিসিবির ৭৭৯ কেজি চাল উদ্ধার করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক আহমেদ।
আতিকুর রহমান,কুড়িগ্রাম থেকে
এ ঘটনায় শরিফুর রহমান নামে এক ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে আনা হয়। পরে গোডাউন মালিক রফিকুল ইসলামের নামে নিয়মিত মামলা এবং শরিফুর রহমানকে এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। গোডাউন মালিক রফিকুল ইসলাম রামখানা ইউনিয়নের দক্ষিণ রামখানা খলাইটারী এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, বুধবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ফ্যামিলি কার্ডের টিসিবির তেল, ডাল ও চাল ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় রামখানা ইউনিয়ন পরিষদের পাশের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলামের গোডাউন থেকে টিসিবির ৭৭৯ কেজি চাল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। পরে চালগুলো রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিনের হেফাজতে ইউনিয়ন পরিষদে রাখা হয়।
অভিযোগ রয়েছে, রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, প্যানেল চেয়ারম্যান রহমত আলী, ডিলার শরিফুর রহমানসহ পাইকার খলিল এবং রফিকুল মিলে টিসিবির তেল, ডাল আর চাল বিক্রি করে ভাগবাটোয়ারা করে নিতেন। বুধবার ওই ইউনিয়নে টিসিবির পণ্য বিতরণ করা হয়। এ সময় প্রকৃত কার্ডধারীদের পণ্য না দিয়ে পাইকারদের কাছে বিক্রি করে দেন ওই সিন্ডিকেট। বস্তায় ভরে এসব পণ্য পাইকারদের নিয়ে যেতে দেখা যায়। এসব পণ্য পাইকাররা রফিকুল ইসলামের গোডাউনে জমা করতে থাকেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, অভিযানের খবর পেয়ে ওই গোডাউন থেকে তেল ও ডাল সরিয়ে ফেলেন রফিকুল ইসলাম। চেয়ারম্যান, মেম্বার এবং ডিলার মিলে এক বছর থেকে এভাবে পণ্য বিক্রি করে আসছেন।
ডিলার শরিফুর জানান, কোথায় কীভাবে কী হয়েছে আমি জানি না। কে কোথায় কীভাবে বিক্রি করেছে আমি কিছুই জানি না। তবে মাস্টাররোল ছাড়া টিসিবির পণ্য বিতরণ সম্পর্কে সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ ব্যাপারে রামখানা ইউপি চেয়ারম্যান জালাল মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আশিক আহমেদ বলেন, গোপন সংবাদ পেয়ে রামখানা ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন বাজারের একটি গোডাউন থেকে ৭৭৯ কেজি চাল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়েছে। গোডাউন মালিক পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে এসিল্যান্ড গিয়ে ৭৭৯ কেজি চাল উদ্ধার করে জব্দ করেছে। আর ডিলারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তার কিছু নিয়মতান্ত্রিক ভুল থাকায় এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও তার ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। পরে গোডাউন মালিকের নামে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।