ঘন্টায় ঘন্টায় পেঁয়াজের মূল্য উর্দ্ধগতি জনমনে আতঙ্ক বিরাজ
মাসুদ রানা চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড এক বিজ্ঞপ্তিতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে— ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার পেঁয়াজ রপ্তানির নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।
ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে কোন কারন ছাড়াই খুচরা ব্যবসায়ীরা নিজেদের খেয়াল খুশিমত বৃদ্ধি করেছে পেঁয়াজের দাম।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগনকে সরকারের বিপক্ষে দাঁড় করানোর জন্য সিন্ডকেট তৈরী করে প্রকাশ্যে ইচ্ছামত দোকানদারগণ পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেছেন। ক্রেতা সাধারন বলছেন, ভোক্তা অধিকারের লোকজন গতকালকে কিছু কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়েছে । অল্প কিছু জায়গায় অভিযান পরিচালনা করে সিন্ডিকেট বন্ধ করা কোন ভাবে সম্ভব নয় । এই অভিযানটি অব্যাহত থাকলে জনসাধারণের মনে কিছুটা স্বস্তি মিলবে ।
গত ( শুক্রবার)
সাপ্তহিক ছুটির দিনের সুযোগে শিবগঞ্জ উপজেলার বাজারগুলোতে ব্যবসায়ীগণ এ অবৈধ কারবারটি করে এক দিনে লাখ লাখ টাকা ক্রেতা সাধারনের নিকট হতে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা অব্যাহত না রাখলে, জনসাধারণ প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। তা না হলে এরা নিজেদের ইচ্ছামত পুন্যের মূল্য বৃদ্ধি করতে থাকবেন বলে সচেতন মহল মনে করেন।
গত শুক্রবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় পেঁয়াজর বিক্রি হয়েছে ৯০/৯৫ টাকা কেজি দরে। কিন্তু সেই পেঁয়াজ বিকালে বিক্রি হয়েছে ১২০/১৪০ কেজি দরে। শনিবার ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
১০/১২/২০২৩( রবিবার) উপজেলার বিভিন্ন বাজারে ঘন্টার ঘন্টায় পেঁয়াজের মূল্য ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। শিবগঞ্জ, কানসাট, বিনোদপুর , মনাকষা সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ২৩০-২৫০টাকা।
এ দাম বৃদ্ধির কারণ হিসেবে খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের উপর দোষ চাপাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খুচরা বিক্রেতা বলেন আমরা এখন কি করব বুঝতে পারছি না, আড়তদারের কাছ থেকে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে , আবার তাদের নাম প্রকাশ করতে নিষেধ করেছে, এমনকি আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনছি এই স্লিপটি ও দিচ্ছে না। ঐ বিক্রেতা বলেন আমরা বেশি দামে কিনেছি তাই আমরা বেশি দামে বিক্রি করছি।
গত সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ৮০/৮৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও কেন কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজ সিন্ডিকেট লাগাহীন মূল্যবৃদ্ধি করলো, এদের বিরুদ্ধে তদন্তকরে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে । আদ্য সকালে উপজেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম ২৩০-২৫০টাকা, এসময় কয়েকজন দোকান মালিক বলেন, পেঁয়াজ নেই, শেষ হয়ে গেছে, কোন কোন দোকান মালিক পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলেছেন। সামান্য কিছু পেঁয়াজ বস্তায় রেখে বিক্রি ২৩০-২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন।
কথা হয় বাজারে আসা ক্রেতা মোয়েজ এর সাথে সাথে। তিনি বলেন, আগে বাজারে একটা বাজেট নিয়ে আসলে যতটুকু কিনতে পারতাম, এখন তার অর্ধেক কিনতে পারি।
পণ্যের দাম বোধহয় আর কখনো কমবে না। এভাবে চললে সামনে বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যাবে। আরেক ক্রেতা ইব্রাহীম বলেন, সব কিছুর দাম তো শুধু বেড়েই চলে।
আমাদের মতো সাধারণ জনগণের কথা কেউ ভাবে না। এই যে দাম বাড়ছে, কিন্তু আমাদের আয় রোজগার তো বাড়ছে না। বেতনের বেশিরভাগ টাকা যদি এখানেই যায়, তাহলে চলব কী করে?
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাংবাদিকদের বলেন পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতে বিধি নিষেধ দিলেও দেশের চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পরিমাণে পেঁয়াজ দেশে মজুত আছে। তাই অতিরিক্ত দাম বা সিন্ডিকেট মোটেও কাম্য নয়। পেঁয়াজের নির্ধারিত দামের বেশি যে ব্যবসায়ী বিক্রি করবে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।