ঠাকুরগাঁওয়ে ব্যস্ততার পরিবর্তে অস্তিত্ব টেকানোর লড়াইয়ে মৃৎশিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য !
মোঃ মজিবর রহমান শেখ, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধি,,বাংলা নববর্ষ উদযাপনে মেলার আয়োজন আবহমান বাংলার একটি ঐতিহ্য। মেলার একটি বড় অংশ জুড়ে থাকে মৃৎশিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন পণ্য। আগে এসব তৈজসপত্র তৈরিতে চৈত্রের শুরু থেকে ব্যস্ততা দেখা যেত কুমারপল্লিতে। বৈশাখী মেলায় তাদের কারুকার্যে ফুটে উঠতো বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্য। বেচা-বিক্রিতেও স্বপ্ন ছুঁতেন তারা।
কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন বদলেছে। তাই আর আগের মতো নেই তাদের বৈশাখ ঘিরে কর্মব্যস্ততা। বরং পূর্বপুরুষের পেশাকে টিকিয়ে রাখতে সংগ্রাম করছেন বেশ কিছু কুমার পরিবার। কালের বিবর্তনে যেমন অনেক কিছুর পরিবর্তন এসেছে ঠিক তেমনি পরিবর্তনে এসেছে একসময়ের মাটির তৈরি হাঁড়ি-পাতিল, থালা-বাসন, সানকি, ঘটি, মটকা, সরা, চারি, কলস, প্রদীপ, ব্যাংক, পুতুল, কলকি, ছোটদের খেলনা হাতি, ঘোড়াসহ দেবদেবীর মূর্তিতে। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের পাল পাড়ায় যে কয়েকটি পরিবার এই পেশা ধরে রেখেছে তাদের পরবর্তী প্রজন্ম অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ জেনে আর এ পেশায় থাকতে চায় না। তাই এই মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। মৃৎশিল্পের সঙ্গে জড়িতরা বলেন, প্লাস্টিকের খেলনা ও আসবাবপত্র বের হওয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমে গেছে। আগে বৈশাখী মেলার জন্য আমরা চৈত্র মাসজুড়ে ব্যস্ত থাকতাম। এখন বাধ্য হয়ে অনেকেই পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য ধরে রাখতে সহযোগিতা চান এই পেশায় জড়িতরা। তারা সরকারিভাবে ঋণ দেওয়ার দাবি জানান। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জায়গার মতো ঠাকুরগাঁও জেলায় মৃৎশিল্পও রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে। মাটির তৈরি পণ্যগুলোতে কীভাবে আরও চাকচিক্য আনা যায় সেজন্য এই পেশায় প্রশিক্ষণ সহ আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহজে ঋণের আওতায় নিয়ে আসতে ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কথা বলেবো।