“পশ্চিমারাই সমকামিতার বিষবাষ্পের সরবরাহকারী”
ইসলাম মানবতার ধর্ম। মানবের দৈহিক, আত্মিক ও নৈতিক কল্যাণ হয় এমন সকল বিষয়কেই ইসলাম সমর্থন করে। এর বিপরীত বিষয়গুলো হয় তো নিষিদ্ধ নয় তো সেই বিষয়ে ইসালাম নিরুৎসাহিত করেছে বারবার। এমনি একটি নিষিদ্ধ কাজ হলো সমকামিতা। বর্তমানে পশ্চিমা বিশ্বের তথাকথিত মানবতাবাদী ও নারীবাদীদের উলঙ্গ ও বিকল মানসিকতার এবং অনৈতিক রুচির পরিচয় পাওয়া যায় সমকামিতার মতো নিকৃষ্ট কাজকে বৈধতা দেয়ার মাধ্যমে। বর্তমানে প্রযুক্তি কল্যাণে মানব জাতি বহু সুফল ভোগ করলেও যে কুফল গুলো তাদের নীতি নৈতিকতাকে গ্রাস করছে তার অন্যতম হলো-স্যাটেলাইট টেলিভিশন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে নানাভাবে সমকামিতার বিষবাষ্প আমাদের যুব সমাজের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যার ফলশ্রুতিতে তৈরি হচ্ছে এক অসুস্থ নৈতিক বিকল মানসিকতার নতুন প্রজন্ম। তাদেরকে সচেতন করার জন্যেই সমকামিতার বিষয়ে ইসলামের যৌক্তিক দৃষ্টি ভঙ্গি তুলে ধরছি। পবিত্র কুরআনে সৃষ্টিকর্তা স্বয়ং এই কাজের কঠিন বিরোধিতা করে কওমে লুতের নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন-“আর (প্রেরণ করেছি) লূতকে। যখন সে তার কওমকে বলল, ‘তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করছ, যা তোমাদের পূর্বে সৃষ্টিকুলের কেউ করেনি’? (সুরা আরাফ সুরা নং ০৭, আয়াত নং ৮০)”। তাদের এ কাজ যে প্রাকৃতিক ও স্বাভাবিক নিয়মের সম্পূর্ণ বিপরীত তাও সাইয়্যেদুনা লুত আলাইহিস সালাম সুস্পষ্ট বর্ণনা করেছেন । পবিত্র কুরআনে তা উল্লেখ করে কিছুটা এভাবে-‘তোমরা তো নারীদের ছাড়া পুরুষদের সাথে (সমকামিতায় লিপ্ত হয়ে) কামনা পূর্ণ করছো! বরং তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী কওম’। (সুরা আরাফ সুরা নং ০৭, আয়াত নং ৮০)”। মরুভাস্কর নুরনাবী ﷺ তাঁর পরবর্তীদের মধ্যে যে সকল অনৈতিক ফিতনাহ নিয়ে চরম আশঙ্কা করতে তার একটি এলো এই সমকামিতা (Gay)’র বিষবাষ্প। তিনি বলেন-“আমি আমার উম্মাতের ব্যাপারে লূত জাতির অনুরূপ অপকর্মে লিপ্ত হওয়ার সর্বাধিক আশঙ্কা করি।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস নং ২৫৬৩ মান: হাসান সহিহ)। ইসলামে এ কুর্মের শাস্তি ভয়াবহ। স্বয়ং আমেনা নন্দন নুরনাবী ﷺ আদেশ করছেন-“তোমরা যে মানুষকে লুত সম্প্রদায়ের কুকর্মে (সমকামিতায়) নিয়োজিত পাবে সেই কুকর্মকারীকে এবং যার সাথে কুকর্ম করা হয়েছে তাকে মেরে ফেলবে।(জামে’ আত-তিরমিজি, হাদিস নং ১৪৫৬ মান: সহিহ)। ইসলামি খিলাফতের বিচার ব্যবস্থায় এই আইনও বাস্তবায়ন করা হবে। সাহাবী হযরত ইবনু ‘আব্বাস (রদ্বিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিতঃ তিনি বলেন, অবিবাহিতদের লাওয়াতাতে (পায়ু কামে) লিপ্ত পাওয়া গেলে রজম করা হবে (অর্থাৎ-তাকে পাথর মেরে হত্যা করা হবে)। (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪৪৬৩ মান: সহিহ মাওকুফ)। যারা নানা ধরনের শয়তানী যুক্তিতে এমন বিকল রুচির পক্ষপাতিত্ব করেন,তাদের উদ্দেশ্যেই মানবতার নাবী নুরনাবী ﷺ সুস্পষ্ট ঘোষণা করেছেন-“(কিয়ামতের দিন) সেই ব্যক্তির দিকে মহা আল্লাহ (রহমতের দৃষ্টিতে) চেয়েও দেখবেন না, যে ব্যক্তি কোন পুরুষের মলদ্বারে (সমকামিতায়) সঙ্গমে লিপ্ত হয়”। (তিরমিযী ১১৬৫, নাসাঈর কুবরা ৯০০১, ইবনে হিব্বান ৪৪১৮, সহীহুল জামে’৭৮০১ মান: সহিহ হাদিস)। এই সংক্ষিপ্ত আলোচনায় এটা দিবালোকের ন্যায় সুস্পষ্ট যে সমকামিতা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠিন হারাম এবং আল্লাহর রহমত হতে বঞ্চিত হওয়ার মতো একটি কুকর্ম। মহা আল্লাহ যেন নুরনবী ﷺ-এর পবিত্র সত্তার উসিলায় আমাদের বর্তমান যুব সমাজ ও আগামী প্রজন্ম এমন নিকৃষ্ট কর্ম হতে বেঁচে থাকার তৌফিক দেন। (আমিন ইয়া রাব্বাল আলামিন)
শেখ খুরশিদ আলম (মানিক) নূরী রিজভী।
ডবল (কামিল) ও ডবল (এম.এ)