ভারতীয় উপমহাদেশের সার্বজনীন সুফি সাধক খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)
আমাদের মধ্যে অধিকাংশ মানুষই খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.)’ র নামের সাথে সুপরিচিত। কেউ উনাকে চিনেন চিশতিয়া সিলসিলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। আবার কারো কাছে তিনি পরিচিত, মহান আল্লাহ তা’য়ালা কর্তৃক প্রদত্ত তাঁর অলৌকিক ক্ষমতার বা বহু গুণের জন্য ।
এক কথায় নানা ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের মানুষের নিকট তিনি শ্রদ্ধাভাজন ব্যাক্তিত্বের অধিকারী । এখন প্রশ্ন হলো খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ১১৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১২৩৫ সালে ৯৭ বছর বয়সে মহান আল্লাহর সান্নিধ্যে গমন করেন। এই ৯৭ বছরের জীবদ্দশায় তিনি এমন কি করেছিলেন? যে আজ ৮১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও তাঁর নাম ও ব্যক্তিত্ব সকলের নিকট সদ্য ফোটা পুষ্পের ন্যায় তরতাজা।
সারা বছরজুড়ে উনার সমাধিস্থলে লক্ষ লক্ষ লোকের সমাগম হয়।এতে ধর্মী-বিধর্মী, শীর্ষক রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। বহু বহু পথ অতিক্রম করে মানুষ তাঁর (তাওয়াসসুল) মাধ্যমে মহান আল্লাহর নিকট নানা প্রার্থনা করেন।
এখন আসা যাক মূল আলোচনায়,খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) যখন পারস্য থেকে ভারত উপমহাদেশে আগমন করেন তখন ভারতীয় মুসলিমদের অবস্থা ছিলো শোচনীয়।তৎকালীন জৈনক এক রাজা, ধর্মগুরু ও ধর্মান্ধদের দ্বারা তিনি বিভিন্ন ভাবে প্রতিবন্ধকতার শিকার হন কিন্তু উনি কখনো বিন্দুমাত্র বিচলিত হন নি আস্থা রেখেছেন মহান আল্লাহ ও সুফিবাদের সুমহান আর্দশের প্রতি। সবর্দা মানুষকে কল্যাণের পথে দাওয়াত দিয়েছেন।
খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) ভালোবাসার অগ্নিবীণা দিয়ে ধর্মান্ধদের কঠোর হৃদয়ে ইসলামের ফুল ফোঁটাতে সক্ষম হন। সুফিবাদ চেতনা ও সুমহান ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়ায় নিজের দাওয়াতি জীবনে কখনো কাউকে অবহেলার দৃষ্টিতে দেখেন নি। ভালোবাসা বিলিয়ে দেওয়ার সময় দেখেননি কে মুসলিম কে অমুসলিম। অসাম্প্রদায়িক মনোভাব ধারণ করা হলো প্রকৃত সুফির বৈশিষ্ট্য।
খাজা মঈনুদ্দিন চিশতি (রহ.) সুফিবাদের চেতনা নিজের অন্তরে লালন করতেন। লক্ষ লক্ষ মানুষ তাঁর যে আচারণ ও আদর্শ দেখে বিমোহিত হয়েছিল সেটিই ছিলো দয়াল নবীর (সা.)’র আদর্শ বা সুফিবাদের আদর্শ।
আজ কিছু কিছু মানুষের স্মৃতি অতল গহীনে চলে গেলেও সূফিবাদের চেতনা ধারণকারী প্রকৃত সূফিরা মানুষের হৃদয়ে উজ্জীবিত ।
লেখক :তৌসিফ রেজা আশরাফি